ইসলামাবাদে নতুন বিমানবন্দরের উদ্বোধন

এশিয়া প্যাসিফিক লিড নিউজ

(ইসলামাবাদ, পাকিস্তান) অবশেষে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উদ্বোধন করা হয়েছে। দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনেকদিন ধরেই আটকে ছিল এর উদ্বোধন। মঙ্গলবার (১ মে) পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসি বিমানবন্দরটি উদ্বোধন করেন। বুধবার এ খবরটি প্রধান শিরোনাম হয় পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলোতে। বৃহস্পতিবার (৩ মে) থেকে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে।

ডন জানায়, মঙ্গলবার তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব এবং জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়ে হেলিকপ্টারে করে বিমানবন্দরে পৌঁছান আব্বাসি। বিমানবন্দরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন ছিল। বিমানবন্দরটি তৈরি করতে ১০৫ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি খরচ হয়েছে। এটিই দেশটির সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর। ইসলামাবাদে ১৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ‘ওয়াই’ আকৃতির বিমান বন্দরটি তৈরি করা হয়েছে। নতুন ইসলামাবাদ বিমানবন্দরটি ২০ এপ্রিল উদ্বোধনের কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসির বিদেশ সফরের কর্মসূচি থাকায় তা পিছিয়ে দেয়া হয়।

এটা নির্মাণ খরচে বেইজিংয়ের অংশগ্রহণ রয়েছে। নির্মাণ করেছে চায়না স্টেট কন্সট্রাকশান ইঞ্জিনিয়ারিং কোঅপারেশান (সিএসসিইসি)। গত মাসে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান এখানকার দুটো রানওয়ের একটিতে অবতরণ করে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করে। ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক টেন্ডার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যৌথভাবে এটি নির্মাণের জন্য চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং পাকিস্তানের  সাথে চুক্তি হয়।

১ লাখ ৮০ হাজার  বর্গমিটার জায়গা নিয়ে নির্মিত টার্মিনালে ১৫টি গেট রয়েছে। যে সব উপাদান এখানে ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো চীন থেকে আনা। এই বিমানবন্দরটি বছরে ৯০ লাখ যাত্রী এবং ৮০ হাজার টন কার্গো ব্যবস্থাপনায় সক্ষম। টার্মিনালের মধ্যে চার-তারকা হোটলও রয়েছে একটি। এছাড়া রয়েছে ডিউটি ফ্রি দোকান, ফুড কোর্ট এবং ৪২টি ইমিগ্রেশন কাউন্টার। নতুন বিমানবন্দর প্রধান সব রকমের বড় বড় বিমান যেমন এয়ারবাস এ৩৮০ এবং এ৩৫০ এবং বোয়িং ৭৪৭-৮ ধরনের বিমানগুলোকেও সেবা দিতে পারবে। তৃতীয় একটি রানওয়ের নির্মাণকাজও চীনা নির্মাতাদের একটি গ্রুপকে দেয়া হয়েছে।

এদিকে পারস্য উপসাগরের উপকূলে পাকিস্তানের গোয়াদরে নৌ ও সাবমেরিন ঘাঁটি গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে বেইজিং। পূর্ব আফ্রিকার দেশ জিবুতির পর এটা হবে দেশের বাইরে পিপলস লিবারেশান আর্মির দ্বিতীয় সামরিক ঘাঁটি। গোয়াদর সমুদ্র বন্দরকে চীনের ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রুট প্রকল্পের সাথে যুক্ত করে দক্ষিণ এশিয়ার ‘দুবাই’ হিসেবে গড়বে পাকিস্তান। ২০১৫ সাল থেকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এলাকার আশেপাশের উপকূলীয় অঞ্চলের বিশাল বিশাল জমি সিএসসিইসি ও অন্যান্য চীনা-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কাছে ৪০ বছরের জন্য লিজ দিয়েছে পাকিস্তান। ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যায়ে বন্দর ও পরিবহন উন্নয়ন অবকাঠামো তৈরির জন্য এই জমিগুলো লিজ দেয়া হয়েছে। গোয়াদর বন্দর থেকে উত্তরে চীনের জিনজিয়াংয়ের স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল পর্যন্ত রেললাইন ও পাইপলাইন স্থাপন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল পরিবহনের বিকল্প একটি রুট তৈরি হবে বেইজিংয়ের জন্য।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।