কংগ্রেসের মতোই বেহাল অবস্থা বেনজিরের পাকিস্তান পিপল’স পার্টির

পাকিস্তান লিড নিউজ

(ইসলামাবাদ, পাকিস্তান) ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের মতোই বেহাল অবস্থা পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পাকিস্তান পিপল’স পার্টির (পিপিপি)। ভারতের রাজনীতিতে এক সময়ের প্রতাপশালী দল কংগ্রেস বর্তমানে যেমন গুরুত্ব হারাচ্ছে, পাকিস্তানের রাজনীতিতেও পিপিপির অবস্থাও তা-ই। পরিবারতন্ত্র নির্ভরশীলতা ও যুগোপযোগী কর্মসূচীর অভাব এবং অন্যান্য প্রভাবশালী দলের আগমনে দল দুটি প্রতিনিয়ত ক্ষয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন দুই দল কংগ্রেস ও পাকিস্তান পিপল’স পার্টি (পিপিপি)। দুল দুটি যথাক্রমে ১৮৮৫ সালে এবং ১৯৬৭ সালে গঠিত হয়।

ওয়ান ইন্ডিয়া জানায়, অতীতের ন্যয় পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক রাজনীতির দ্বন্দ্ব এখন আর পিপিপি আর পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল) মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং  বর্তমানে সেটা পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান খানে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) মধ্যকার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রবল প্রতাপে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে পিপিপির অবস্থা এখন শোচনীয়। ভারতের রাজনীতিতে ১৩২ বছরের পুরনো দল কংগ্রেসের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সংকুচিত হয়ে আসছে, তেমনি কমে আসছে ৫০ বছরের পিপিপির কর্মকাণ্ডও। দলটি এই মুহূর্তে একটি আঞ্চলিক শক্তিমাত্র। এর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন পাকিস্তানের চার প্রদেশের অন্যতম সিন্ধু অঞ্চলে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।]ৱ

দল দুটির বর্তমান এ শোচনীয় অবস্থার কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দল দুটি পরিবারতান্ত্রিক নেতৃত্বের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে এবং এর থেকে কোনোভাবেই বের হতে পারছে না। গত বছরের ডিসেম্বরে যদিও পিপিপি তার ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন করে, তবে এক্ষেত্রে তাদের অন্তসারশূন্যতা প্রকাশ পায়। স্বৈরশাসনের নিগড় মুক্তির লক্ষ্যে দলটি পাকিস্তানের দরিদ্র ও শ্রমিক শ্রেণীকে ঐক্যের ডাক দিয়ে একটি সমাজতান্ত্রিক সরকার গড়ার প্রত্যয় নিয়ে গড়ে ওঠে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোর হাত ধরে প্রতিষ্ঠা পায় দলটি। তার মৃত্যুর পর দলের হাল ধরে মেয়ে বেনজির ভুট্টো। বেনজিরের গুপ্তহত্যার দলের নেতৃত্বে এসেছে তার ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। দলটির পরিবারতান্ত্রিক নেতৃত্ব কংগ্রেসের গান্ধী পরিবারের ক্ষেত্রে গভীরভাবে সত্য।

১৯৮৪ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ১৯৯১ সালে তার ছেলে রাজিব গান্ধীর গুপ্তহত্যার পর বড় ধরনের পতনের মুখে পড়ে কংগ্রেস। এরপর দলটির নেতৃত্বে অনেকটা স্থিতিশীলতা নিয়ে আসেন রাজিবের বিধবা পত্নী সোনিয়া গান্ধী। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বড় ধরনের পরাজয়ের পর সম্প্রতি দল থেকে অবসর নিয়েছেন সোনিয়া। তার অবসরের পর দলের নেতৃত্বে রাজিব-সোনিয়ার ছেলে রাহুল গান্ধী।

জুলফিকার আলী ভুট্টো ও তার মেয়ে বেনজিরের মৃত্যুতে বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়ে পিপিপি। ১৯৭৯ সালে জুলফিকারকে ফাসিতে ঝোলান সাবেক সেনাশাসক জিয়াউল হক। এর প্রায় তিন দশক পর ২০০৭ সালে নির্বাচনী প্রচারণাকালে গুপ্তহত্যার শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারান পাকিস্তানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেনজির।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।