(কর্ণানক, ভারত) ফলাফলের পর দুই দিন পেরিয়ে গেছে। তবে সরকার গঠন নিয়ে নাটকীয়তা অব্যাহত রয়েছে। বিধানসভায় নির্বাচনের পর কারা সরকার গড়ছে, বিজেপির পদ্ম না কংগ্রেসের হাত এমন প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে ভারতজুড়ে। এই প্রশ্নের উত্তর পেতে রাজনৈতিক দলগুলি রাজ্যপালের দ্বারস্থ সব পক্ষ ৷ ভোটযুদ্ধের পর এখন চরমে স্নায়ুযুদ্ধ। সরকার গড়তে কাকে ডাকবেন রাজ্যপাল বাজুভাই বালা? বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ইয়েদুরাপ্পা বুধবার সকালে দেখা করেন রাজ্যপালের সঙ্গে। সরকার গঠনের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বসে নেই কংগ্রেস এবং জনতা দল সেকুলারও। কংগ্রেস ইতিমধ্যে হুশিয়ারি দিয়েছে রাজ্যপাল যদি কর্ণাটকে বিজেপিকে সরকার গঠনের জন্য ডাকেন, তাহলে প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন তার।
এদিকে এইচডি কুমারস্বামীর অভিযোগ, সরকার গড়তে তাদের বিধায়ক কেনার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। ১০০ কোটি টাকা ও মন্ত্রী করার টোপ দেওয়া হচ্ছে। নিউজ১৮ জানায়, শেষবেলায় রং বদলে ত্রিশঙ্কু সরকার গড়ার পথে কর্ণাটক। একক বৃহত্তম দল হয়েও ম্যাজিক ফিগার থেকে দূরে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে রুখতে মরিয়া কংগ্রেস। মঙ্গলবারই রাজ্যপাল বাজুভাই বালার সঙ্গে জেডিএস ও কংগ্রেস জোট আর্জি নিয়ে দেখা করে কুমারস্বামী ও সিদ্দারামাইয়ায়ও ৷ অন্যদিকে বুধাবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানায় ইয়েদুরাপ্পা। বিজেপির এক আইনপ্রণেতা বুধবার এনডিটিভিকে বলেছেন, বৃহস্পতিবার সরকার গঠন করবে বিজেপি প্রার্থী ইয়েদুরাপ্পা।
কর্ণাটকের রাজ্যপালের বয়স ৮০ বছর। তার মানে জীবনটা তিনি অনেক ঘেঁটেঘুঁটে দেখেছেন। ছোট থেকেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের আদর্শে লালিত ও পালিত। কেশুভাই প্যাটেল যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী, তখন তার মন্ত্রিসভার সদস্য। ২০০১ সালে রাজ্যে পালাবদলের সময় তিনি রাজকোটে নিজের আসনটা নরেন্দ্র মোদির জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেই প্রথম মোদির বিধায়ক হওয়া এবং মুখ্যমন্ত্রিত্ব লাভ। তার পর বাজুভাই ফের মোদি-মন্ত্রিসভায় ফিরে আসেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন একজনের পক্ষে কি কর্ণাটকে বিজেপি নেতা ইয়েদুরাপ্পাকে সরকার গঠনের সুযোগ না দিয়ে কংগ্রেস-জেডি (এস) জোটকে ডাকা সম্ভব?
কর্ণাটকের ২২৪ আসন বিশিষ্ট বিধানসভায় ভোট হয়েছে ২২২টিতে। এর মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ১০৪, কংগ্রেস ৭৮, জেডি(এস) ৩৭, বিএসপি ১ ও স্বতন্ত্র ২। ফল বেরোনোর পরপরই সরকার গড়তে কংগ্রেস নিঃশর্ত সমর্থনের চিঠি পাঠিয়ে দেয় জেডি(এস) নেতা এইচ ডি কুমারস্বামীকে। সমর্থন জানায় বিএসপিও। জেডি(এস)-এর সঙ্গে তারা ভোটের আগেই জোট বাঁধে। তিন দলের সম্মিলিত আসন হচ্ছে ১১৬। এটা সরকার গড়ার জন্য যা প্রয়োজন তার চেয়েও বেশি। এখন কি করে এই দাবি অস্বীকার করবেন রাজ্যপাল?
এদিকে ইতিমধ্যে জেডিএস প্রধান তথা কংগ্রেসের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রীর দাবিদার এইচডি কুমারস্বামীর অভিযোগ, সরকার গড়তে তাদের বিধায়ক কেনার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। ১০০ কোটি টাকা ও মন্ত্রী করার টোপ দেওয়া হচ্ছে। এইচ ডি কুমারস্বামী বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিধায়ক কেনার চেষ্টা করছে বিজেপি ৷ বিধায়ক ভাঙাতে ১০০ কোটি টাকার টোপ দিচ্ছে ৷ মন্ত্রিত্ব দেয়ার লোভ দেখাচ্ছে ‘। সুতরাং নির্বাচন শেষ হলেও সরকার গঠন নিয়ে নাটকীয়তার শেষ সহসাই হচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।