(গাজা, ফিলিস্তিন) আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত বিক্ষোভ জানাবেন ফিলিস্তিনিরা। গাজায় এক সাংবাদিক সম্মেলন করে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার এ ঘোষণা দিয়েছেন। গাজা উপত্যকার অধিবাসীদের ক্ষুধার্ত বাঘের সঙ্গে তুলনা করে ইয়াহিয়া সিনওয়ার বলেন, আগামী সপ্তাহের বিক্ষোভে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ইসরাইলের সীমান্ত বেড়ার দিকে ধাবিত হতে পারেন বলে সম্ভাবনা রয়েছে। এটিকে তিনি চূড়ান্ত বিক্ষোভ বলে আখ্যায়িত করেন। খবর এএফপি ও ইন্ডিপেন্ডেন্টের।
গাজা সীমান্তে ইসরাইলের দেয়া সীমান্ত বেড়ার অস্তিত্বকে অস্বীকার সাংবাদিকদের ইয়াহিয়া বলেন, কোনো রাষ্ট্রের সীমান্ত নয়, হাজার হাজার লোক যদি এমন একটি বেড়া অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়, তাতে সমস্যা কী? তাতে কার কী আসে যায়? বছরখানেক আগে প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের গাজা উপত্যকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ইয়াহিয়া। হওয়ার পর বিদেশি সাংবাদিকদের নিয়ে এটাই তার প্রথম কোনো সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন।
ইয়াহিয়া বলেন, গাজার দুঃসাহসী তরুণরা এক একটা টাইম বোমায় পরিণত হয়েছে। যদি এখানকার মানবিক সংকটের সুরাহা করা না হয়, তবে যে কোনো সময় তাদের ইসরাইলমুখী বিস্ফোরণ ঘটবে। বিক্ষোভকে শান্তিপূর্ণ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, কেউ জানেন না এই ক্ষুধার্ত বাঘেরা কোন দিকে ধাবিত হয়। কিংবা তারা কী ঘটাতে পারেন।
গত ৩০ মার্চ শুরু হওয়া ফিলিস্তিনিদের ভূমি দিবস উপলক্ষে বেদখল ভিটেমাটিতে ফেরার বিক্ষোভে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত ৫২ জন নিহত হয়েছেন। এ বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত কোনো ইসরাইলি হতাহত হয়নি। সেদিকে ইঙ্গিত করে সিনওয়ার বলেন, এটিই প্রমাণ করে আমাদের বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। ২০০৭ সালে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে উপত্যকাটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইল। সিনওয়ার হুশিয়ার করে বলেন, অবরোধ উঠিয়ে নেয়া না হলে প্রতিবাদকারীরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারেন।
ইয়াহিয়ার মতে, গাজার অধিবাসীরা এখন এক একটা ক্ষুধার্ত বাঘ। যারা বহুদিন খেতে পায়নি। গত ১১ বছর ধরে যাদের খাঁচায় আটকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, বাঘ এখন মুক্ত। তারা এখন কী করবেন, তা কেউ বলতে পারে না। ইসরাইলি অবরোধের কারণে উপত্যকাটি এখন বেকারত্বের শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। দূষণের কারণে সেখানকার পানিও খাওয়ার যোগ্য না।
একদিন আগে গাজার তরুণদের উদ্দেশ্যে ইয়াহিয়া বলেন, নিপীড়ন ও অবমাননায় মৃত্যুবরণ করার চেয়ে আমরা শহীদ হয়ে যাব। আমরা মরতে প্রস্তুত। হাজার হাজার তরুণ আমাদের সঙ্গে মারা যাবে। অবৈধ রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইলের প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ইসরাইলের দূতাবাস তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করা হবে। এ দিনটিতে ফিলিস্তিনিরা ব্যাপক বিক্ষোভ করবেন বলে জানা গেছে।