ট্রাম্প-কিম কি পারবেন কোরীয় যুদ্ধের ইতি টানতে

এশিয়া প্যাসিফিক লিড নিউজ

(সিঙ্গাপুর সিটি, সিঙ্গাপুর) আর মাত্র দুই দিন বাকী। এরপর উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বহুল আলোচিত ও কাঙিক্ষত ঐতিহাসিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে মিলিত হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। ট্রাম্প ও কিমের এই বৈঠককে সামনে রেখে ওয়াশিংটনের দৃষ্টি পিয়ংইয়ংয়ের সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের দিকে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু দেশ দক্ষিণ কোরিয়া চাচ্ছে কয়েক দশক ধরে চলা কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি এবং সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। এ লক্ষ্যে যতভাবে সম্ভব কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সিউল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এ বৈঠকের মধ্যদিয়ে কিম-ট্রাম্প কি পারবেন প্রায় ৬৮ বছর ধরে চলা কোরীয় যুদ্ধের অবসান ঘটাতে।

সিঙ্গাপুরে বৃহস্পতিবারের শীর্ষ বৈঠককে সামনে রেখে ট্রাম্প অবশ্য বলছেন, দুই কোরিয়ার এ যুদ্ধাবস্থার অবসানে কিমের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছতে পারবেন তিনি।  এক প্রতিবেদনে এপি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাঙিক্ষত উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচীর সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ সম্পন্ন হতে হয়ত এমন আরও দুয়েকটা শীর্ষ বৈঠক লেগে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এই বৈঠকে ট্রাম্পের দৃষ্টি থাকবে  খুব দ্রুতই একটা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের দিকে। কারণ যে করেই এ বছরের শান্তির নোবেলটা তাকেই পেতেই হবে। তবে সেটা সম্ভব হতে পারে যদি দুই পক্ষই বড় ধরনের ছাড় দিতে সম্মত হন।

ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের দৃষ্টি যখন ‘শান্তি চুক্তির’ দিকে কিম তখন ভাবছেন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির কথা ভাবছেন কিম। এমন একটা চুক্তি উত্তরের বহুদিনের চাওয়াও বটে। আর সেটা হচ্ছে, কোরীয় উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের যত সেনা মোতায়েন আছে, তার সবগুলো সরিয়ে নেয়ার চুক্তি যে চুক্তির মধ্যদিয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বে দুই কোরিয়ার পুন:একত্রীকরণ সম্ভব হবে।

১৯৫০ সালে যুদ্ধ শুরু হয় কোরিয়ার দুই অংশের মধ্যে। আঞ্চলিক এ যুদ্ধটি ইতিহাসে কোরীয় যুদ্ধ নামে পরিচিত। উত্তর কোরিয়ার পক্ষে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া) ও  চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে জাতিসংঘের সম্মতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য কয়েকটি দেশ প্রত্যক্ষভাবে এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

প্রায় তিন ধরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলার পর ১৯৫৩ সালে যুদ্ধ শেষ হয় বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা শেষ হয়নি। কারণ যুদ্ধের অবসানের জন্য কোনো শান্তি ছাড়াই শুধুমাত্র একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে এ যুদ্ধের আপাত ইতি ঘটে।  জাতিসংঘ বাহিনীর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার বাহিনীর পক্ষে চীনের মধ্যে এ যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হয়। সাময়িক একটি যুদ্ধবিরতি হলেও দেশ দুটি কার্যত গত ৬৮ বছর ধরে যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে দুই কোরিয়ার সীমান্ত বিশ্বের সবচেয়ে অস্ত্রসজ্জিত সীমান্তগুলোর অন্যতম। দুই কোরিয়ার সাধারণ জনগণের অভিন্ন স্বপ্ন হচ্ছে, এ অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধের সমাপ্তি ও দুই কোরিয়ার পুন:একত্রীকরণ।

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।