পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতার ঝুকিতে মধ্যপ্রাচ্য

মধ্যপ্রাচ্য লিড নিউজ

শিগগিরই একে একে মধ্যপ্রাচ্যের সবদেশই পরমাণু বোমার অধিকারী হতে চাইতে পারে। বর্তমানে এই অঞ্চল পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতা ভয়াবহ ঝুকিতে রয়েছে। এ প্রতিযোগিতার শুরু হওয়ার আগেই এর লাগাম টেনে ধরার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ফরেন পলিসির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, একদিকে বিশ্বের ছয় জাতির সঙ্গে ইরানের আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে তিনিই মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের চরম প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবকে পরমাণু অস্ত্র প্রযুক্তি সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছেন। এর ফলেই এই অঞ্চলে পরমাণু অস্ত্র বোমার প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার ঝুকি তৈরি হয়েছে।

পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ায় নতুন করে পরমাণু কর্মসূচী শুরু করার হুমকি দিয়েছে ইরান। এদিকে সৌদি আরব বলছে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করলে তারাও তৈরি করবে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে একটা আঞ্চলিক পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতা ক্রমেই বাস্তবতায় পরিণত হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, ইরান পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচী শুরু করলেই তা অনুসরণ করবে সৌদি আরব। এরপর একে একে আলজেরিয়া, মিসর ও মুসলিম বিশ্বের শক্তিশালী দেশ তুরস্কও পরমাণু বোমা চায়বে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এক বছরের মধ্যেই পরমাণু বোমা বানাতে পারে ইরান। দেশটি ইতিমধ্যে ১০ কিলোটন বোমার নকশা নিয়ে কাজ করছে বলেও দাবি করা হয়েছে। পরমাণু অস্ত্র বানাতে যে গ্রেডের ইউরেনিয়াম দরকার তা সমৃদ্ধ করার জন্য তেহরানের ইতিমধ্যে যে সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে তা চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মাধ্যমে প্রথম বোমাটি বানানোর জন্য যথেষ্ট ইউরেনিয়াম ৮ থেকে ১০ মাসের মধ্যে সমৃদ্ধ করতে পারে দেশটি।  ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি বলেছেন, তেহরান দু থেকে তিন দিনের মধ্যে ২০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম।

তবে ইরান হয়ত এখনই বোমা বানানোর দিকে চায়বে না। কারণ তারা জানে, তড়িঘড়ি করে বোমা বানাতে গেলে তাদের দেশের ওপর মার্কিন হামলা হতে পারে। আর তাই এর বদলে চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পাশে রাখার সব চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে পরমাণু চুক্তির এ পক্ষগুলোর কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা না পেলে দ্রুতই পরমাণু কর্মসূচী শুরু করবে দেশটি। সেক্ষেত্রে তাদের এ পরমাণু কর্মসূচী সৌদি আরবের পরমাণু বোমা অর্জনের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জোবায়ের ইতিমধ্যে সরাসরিই বলেছেন, ইরান পরমাণু সক্ষমতা অর্জন করলে পরমাণু বোমার অধিকারী হতে ‘যা যা করা দরকার’ তার সব করবে সৌদি আরব। পরমাণু তৈরির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে ইতিমধ্যে আলাপ-আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও পাকিস্তান পরমাণু সহযোগিতা পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।