(কর্নাটক, ভারত) কর্নাটক নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিরোধী দল কংগ্রেসের মধ্যে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের কাদা ছোড়াছোড়ি তীব্র আকার ধারণ করছে। এবার কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বিজেপি ভারতকে মুসলিম প্রেসিডেন্ট দিয়েছে। একজন দলিতকে্ও প্রেসিডেন্টের আসনে বসিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস মুসলিম ও দলিতদের সঙ্গে বেইমানি করেছে। বৃহস্পতিবার কর্ণাটকে এক নির্বাচনী জনসমাবেশে ভাষণ দেয়ার সময় এ কথা বলেন মোদি। খবর এনডিটিভির।
প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের সমালোচনা করে বলেন, ‘কংগ্রেস দল দলিত ও মুসলিমদের নামে রাজনীতিতে পারদর্শী। এই নির্বাচনেও তারা দলিতদের নামে গান করছে। গত নির্বাচনের সময় তারা মাল্লিকার্জন খাড়গেজিকে মুখ্যমন্ত্রী করার কথা বলেছিলেন কিন্তু তা না করে সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল। বিজেপি দল দেশকে মুসলিম প্রেসিডেন্ট দিয়েছে। অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকার এ পি জে আব্দুল কালামকে প্রেসিডেন্ট করেছে। এবার আমরা এক দলিতকে প্রেসিডেন্ট করেছি। বিজেপি ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর জাতি) সম্প্রদায়ের চা-ওয়ালাকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছে।’
মোদি বলেন, কংগ্রেস দুর্নীতিতে ’গোল্ড মেডালিস্ট’। কংগ্রেস কেবল ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে এবং তারা দলিত-আদিবাসী বিরোধী বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অন্যদিকে বৃহস্পতিবারই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী কর্ণাটকে নির্বাচনী জনসভায় মোদিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘কর্ণাটকে মোদিজি লম্বা ভাষণ দিয়েছেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি কর্ণাটকে এসে দুর্নীতির কথা বলছেন কিন্তু আপনাদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। নীরব মোদি দেশবাসীর ত্রিশ হাজার কোটি টাকা নিয়ে দেশ থেকে পালিয়েছেন। কিন্তু আপনি কিছুই বলেননি। আপনি আমাকে উপহাস করেছেন কিন্তু আমার প্রশ্নের জবাব দেননি।’
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মোদি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ করলেও তার দল ও সরকারের বিরুদ্ধে রয়েছে মুসলিম ও দলিতদের ওপর করা নানা অভিযোগ। মুসলিম ও দলিতদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ‘বন্দি মুক্তি কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক ছোটন দাস বৃহস্পতিবার বলেন, ‘মোদির শাসনামলেই মুহাম্মদ আখলাক, জুনায়েদরা নিহত হয়েছেন। বহু মানুষ কেবল তাদের পছন্দ মতো খাবার খাওয়ার জন্য আক্রান্ত হয়েছেন। দলিতদের বিষয়ে তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।ওনার দল ও দলীয় মন্ত্রী তারা ধর্ষকদের পক্ষে মিছিল করছেন। ওনার দলের লোকেরা পুলিশকে চার্জশিট দিতে বাধা দিচ্ছে। রাজস্থানে কেবলমাত্র ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার চেষ্টা করায় এক দলিতকে পেটানো হয়েছে। ফলে দলিতদের সম্পর্কে এসব কথা বলে, নিজের দলের রক্তাক্ত চেহারাকে উনি আড়াল করতে চাচ্ছেন।’
ছোটন দাস বলেন, ‘মানুষ তাদের অভিজ্ঞতা থেকে এসব বুঝেছেন এবং ২ এপ্রিল দলিতরা ভারত বনধের মাধ্যমে তা দেখিয়ে দিয়েছেন। গোটা দেশে দলিত ও মুসলিমরা যৌথভাবে বড় আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সুতরাং আতঙ্ক থেকে উনি এসব বলছেন। তিনি বলেন, ‘একজন প্রধানমন্ত্রী তিনি নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে পারছেন না বরং তার দল নাগরিকদের হত্যা করছে ধর্মীয় কারণে ও দলিত হওয়ার কারণে। ওনার দল অভিযুক্তদের রক্ষা করছে তা উনি আড়াল করতে চাচ্ছেন।’