(লন্ডন, যুক্তরাজ্য) অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও হলিউডের ’বাঘিনী মেজাজের’ অভিনেত্রী মেগান মার্কলকে বিয়ে করছেন প্রিন্স চার্লস ও প্রয়াত প্রিন্সে ডায়ানার ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি। চলতি মাসের ১৯ তারিখেই ইংল্যান্ডের উইন্ডসর ক্যাসেলে এ জুটির বিয়ে। ‘অবশেষে’ বলা হল এই কারণে যে, মেগানের আগে বহু তরুণীর প্রেমে পড়েছেন হ্যারি। এসব তরুনীদের বেশিরভাগই তার নিজের দেশের এবং অভিজাত ও ডাকসাইটে সুন্দরী। কিন্তু তাদের কারো সঙ্গে গাটছড়া বাধার কথা চিন্তা করেন নি হ্যারি। হ্যারির ক্ষেত্রে এটা প্রথম বিয়ে হলেও মেগানের এটা দ্বিতীয় বিয়ে।
মেগান মারকলকে বিয়ে না করতে হ্যারিকে সতর্ক করেছেন মেগানের সৎভাই টমাস মারকল জুনিয়র। পত্রিকার ছাপানো এক খোলাচিঠিতে এতে তিনি লিখেছেন- ‘আমার বোনের মতো স্বার্থপর মেয়ে এই দুনিয়ায় আর নেই। যে নিজের পরিবারকে ভুলে যেতে পারে, তাকে আপনি কী করে বিশ্বাস করবেন? এ রকম একজন নারীকে আপনি বিয়ে করলে ব্রিটেনের রাজপরিবারের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে।’
মার্কিন গসিপ পত্রিকা ইন টাচকে পাঠানো এ খোলাচিঠিতে হ্যারিকে ‘এখনও সময় আছে’ জানিয়ে বোনকে বিয়ের কথা ভেবে দেখতে বলেন মেগানের ৫১ বছর বয়সী ভাই। এর আগে গত মাসে একটি মার্কিন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পরিবারের কাউকেই মেগান নিজের বিয়েতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন না বলে দাবি করেছিলেন টমাস। তবে তার কথা বিশেষ আমলে নিচ্ছেন না কেউ। জানা গেছে, পরিবারকে দাওয়াত না করার দাবিও ঠিক নয়। ১৯ মে বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে লন্ডন আসছেন মেগানের মেক্সিকোবাসী বাবা ও ক্যালিফোর্নিয়াবাসী মা।
এখন ইংল্যান্ডের অনেকেরই প্রশ্ন, এত এত অভিজাত ব্রিটিশ সুন্দরীদের ছেড়ে ৩৩ বছরের হ্যারি কেন ৩৬ বছরের একজন মার্কিন অভিনেত্রীর প্রেমে মজলেন। সুদর্শন হ্যারি কেন সাবেক সেই সব সুন্দরীদের রেখে মেগানকেই বিয়ে করছেন এ নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন রাজপরিবারের শীর্ষ ইতিহাস লেখকেরা। তাদের মতে, এর পেছনে কাজ করেছে হ্যারির জটিল মনস্তত্ত্ব।
২০১৬ সালের জুলাই। এক মনোরম সন্ধ্যায় মেগানের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাত হ্যারি। এ সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেন উভয়ের বন্ধু ফ্যাশন ডিজাইনার মিশা নোনু। সেই সন্ধ্যাবেলায় দুজনের ফোন নম্বরের বিনিময়। পরবর্তী কয়েকদিনে মেগানের ফোন হ্যারির টেক্সট ম্যাসেজে সয়লাব হয়ে যায়। এরপর আরও দুই বার দেখা করেন হ্যারি ও মেগান। প্রথম তিনবারের সাক্ষাতেই হ্যারি বুঝে যান, তিনি এতদিন ধরে যাকে খুঁজছেন তাকেই তিনি পেয়ে গেছেন। এরপরই আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায় তার সঙ্গে ছুটি কাটাতে মেগানকে প্রস্তাব দেন হ্যারি। এতদিনে একবারের তালাকপ্রাপ্তা মেগান বুঝে গেছেন, তিনি তার আদর্শ মানুষটিকে খুজে পেয়েছেন। তাই হ্যারির সঙ্গে বতসোয়ানায় ছুটি কাটাতে যান তিনি। সেই থেকে একসঙ্গেই সময় কাটাচ্ছেন এই জুটি।
মেগানের সঙ্গে সাক্ষাতের কিছুদিন আগেই যে তরুণীর সঙ্গে হ্যারি প্রেম করেছেন তিনি হচ্ছেন ব্রিটেনের রিচমন্ডের মেয়ে রেবেকা উডহেড। ২৬ বছর বয়সী এই তরুণী একজন স্কি মডেল। আরও যে সব তরুণীর সঙ্গে হ্যারি প্রেমে করেছেন বলে জানা যায় তাদের মধ্যে রয়েছেন, ২০০৩ সালে ব্রিটেনের শেয়ার ব্যবসায়ী কন্যা লরা জেরার্ড লেইগ। ২০০৯ সালে প্রিন্স উইলিয়ামের স্ত্রী কেট মিডলটনের এক বান্ধবী অস্ট্রিড হারবোর্ড। একই বছর টেলিভিশন উপস্থাপিকা ক্যারোলিন ফ্ল্যাক। ২০১২ সালে স্কি খেলোযাড় মলি কিং, ২০১৪ সালে সাবেক মিস এডিনবার্গ ক্যামিলা থারলো এবং ২০১৬ সালে পপ সংগীত শিল্পী এলি গোল্ডিংয়ের সঙ্গে। এর বাইরেও আরও অনেকের সঙ্গে হ্যারির সম্পর্ক ছিল বলে ধারণা করা হয়।
২০০৩ থেকে শুরু করে ২০১৬ পর্যন্ত প্রায় এক ডজন তরুণীর সঙ্গে প্রেম করলেও কারো প্রতি মন মজেনি হ্যারির। এর কারণ হিসেবে রাজপরিবারের এক পুরোহিত বলেন, ‘প্লেবয়ের মতো মেয়েদের নিযে পড়ে থাকলেও তার মধ্যে সবসময় অনিরাপত্তা কাজ করত। এছাড়া তিনি সর্বদা একটা স্থিতিশীল সম্পর্ক চাইতেন।’