রুশবিরোধী বলয় গড়তে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাজ্য

ইউরোপ লিড নিউজ

(লন্ডন, যুক্তরাজ্য) রাশিয়াবিরোধী বলয় গড়তে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাজ্য। মস্কোবিরোধী জোট গড়ে তুলতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে ব্রিটিশ নেতারা। পক্ষত্যাগী রুশ কূটনীতিক ও তার মেয়েকে বিষ প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এর প্রতিক্রিয়ায় দেড় শতাধিক রুশ কূটনীতিক বহিস্কারে ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। চলতি বছর এমন আরও কিছু পদক্ষেপ নেবে তেরেসার সরকার। রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে চলতি বছর অনুষ্ঠেয় কয়েকটি আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনকে কাজে লাগাবে ব্রিটিশ মন্ত্রীরা।

দ্য গার্ডিয়ান বৃহস্পতিবার এক এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাশিয়ার তথ্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে ও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে মস্কোর ক্রমবর্ধমান প্রভাব খর্ব করতে কার্যকর ও কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে যুক্তরাজ্য। এ লক্ষ্যে চলতি বছর ধারাবাহিক কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে ব্যবহার করবে লন্ডন। এসব সম্মেলনে মস্কোর সঙ্গে প্রচলিত কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপারে নতুন করে চিন্তা-ভাবনার আহ্বান জানানো হবে। রুশ কূটনীতিক সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপালকে হত্যাচেষ্টা এবং সিরিয়ায় আসাদ সরকারের রাসায়নিক হামলার অভিযোগ অস্বীকারের পর এ বিকল্প পথে হাটছেন ব্রিটিশ নেতারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরেই ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে জি৭, জি২০, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন শীর্ষ সম্মেলন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি কার্যকর জোট গড়ে তুলতে এ সম্মেলনগুলোকে ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছেন ব্রিটিশ কূটনীতিকরা। স্ক্রিপাল ঘটনার পর যুক্তরাজ্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ আমেরিকা ও ইউরোপের বহু দেশ রাশিয়ার দেড় শতাধিক কূটনীতিক বহিস্কার করে। এই ঘটনাকে তেরেসার কূটনৈতিক বিজয় বলে মনে করা হয়। রাশিয়াবিরোধী এই দেশগুলোকে নিয়ে একটি কার্যকর জোট বা বলয় গড়ে তুলতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ কূটনীতিকরা।

কূটনৈতিক পদক্ষেপের পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক পদক্ষেপ আগে থেকেই অব্যাহত রয়েছে। রাশিয়ার সামরিক ব্যয় ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবারের মতো ২০১৭ সালে অনেক হ্রাস পেয়েছে। মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে সরকারি কোষাগারে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় এ ব্যয় হ্রাস করা হয়। এক জরিপ থেকে বুধবার এ তথ্য জানা গেছে।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিচ রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) জানায়, মস্কো ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত বছর রাশিয়ার সামরিক ব্যয় ছিল ৬৬.৩ বিলিয়ন ডলার। পূর্ববর্তী ২০১৬ সালের তুলনায় এ ব্যয় ২০ শতাংশ কম। ব্যাপক আর্থিক সংকটের মুখে মস্কো এর আগে ১৯৯৮ সালে তাদের দেশের সামরিক ব্যয় হ্রাস করে।

ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপের অন্তর্ভূক্তি প্রশ্নে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর অবরোধ আরোপের কথা উল্লেখ করে এসআইপিআরআই’র সিনিয়র গবেষক সিমন ওয়েজমান বলেন, ‘রাশিয়া সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া বজায় রাখলেও আর্থিক সমস্যার কারণে সামরিক বাজেট কাটছাট করছে। ২০১৪ সাল থেকে দেশটি এই সংকট মোকাবেলা করছে।

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।