গুলিতে নিহত রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্যে যাওয়ার পথে ব্রাশফায়ারে নিহত হয়েছেন ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) প্রধান তপনজ্যোতি চাকমাসহ পাঁচজন। আহত হয়েছে আরও সাত জন। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে নানিয়ারচরের বেতছড়ি এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুগান্তর।
নিহত অন্য চারজন হলেন মহালছড়ির সেতু লাল চাকমা (৪০), কনক চাকমা (৩৮) ও সুজন চাকমা (৩০) এবং খাগড়াছড়ির পানছড়ি বাসিন্দা মাইক্রোবাস চালক বাঙালি সজীব (৩৪)। হামলায় আহত সাতজন এর মধ্যে দিগন্ত চাকমা (৩০), অর্চিন চাকমা (২৮), অর্জুন চাকমা (৩০) ও মিহির চাকমার (২৮) অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া জীবন্ত চাকমা (৩০), শান্তিরঞ্জন চাকমা (৩৪) ও প্রীতি কুমার চাকমা (৩৮) খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে যাওয়ার পথে অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক জনসংহতি সমিতি থেকে বেরিয়ে গঠিত জনসংহতি সমিতি এমএন-লারমার প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হতাহতরা একটি মাইক্রোবাসে করে আগের দিন গুলিতে নিহত নানিয়ারচরের উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্যে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। মাইক্রোবাসটি রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সীমান্তের কাছে বেতছড়ি এলাকায় পৌঁছলে সেখান আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়।
হামলাকারীরা প্রথমে মাইক্রোবাসের বাঙালি চালক সজীবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সজীব গুলিবিদ্ধ হলে গাড়িটি উল্টে যায়। এর পর দুর্বৃত্তরা আরোহীদের লক্ষ্য করে ব্রাশফায়ার করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) প্রধান তপনজ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা, কনক চাকমা ও সুজন চাকমা নিহত হন। তাদের লাশ রাঙামাটি সদর হাসপাতালে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাকিদের খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চালক সজীব ও সেতু লাল চাকমা মারা যান। এ হাসপাতালেই তাদের লাশ রাখা হয়েছে। নানিয়ারচরের ওসি আবদুল লতিফ জানান, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে তিনজন ঘটনাস্থলে এবং গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চালক ও আরও একজন খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালে মারা গেছেন।